শেয়ার বাজার (Stock Market) A to Z হল একটি বাজার যেখানে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার (অংশীদারিত্বের কাগজপত্র) কেনা-বেচা করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা বিনিয়োগকারীদের এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির

শেয়ার বাজার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য Stock Market

শ্রেণীভুক্ত নয়

শেয়ার বাজারের প্রকারভেদ:

  1. প্রাথমিক বাজার (Primary Market):
    • এখানে কোম্পানি প্রথমবার শেয়ার ইস্যু করে।
    • IPO (Initial Public Offering)-এর মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করা হয়।
    • এই বাজারে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কোম্পানি থেকে শেয়ার কেনেন।
  2. দ্বিতীয় বাজার (Secondary Market):
    • এখানে শেয়ার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কেনা-বেচা হয়।
    • স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার লিস্টেড হওয়ার পর এটি সক্রিয় হয়।
    • উদাহরণ: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE), নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ (NYSE)।
  3. ডেরিভেটিভ মার্কেট (Derivative Market):
    • শেয়ারের ভবিষ্যৎ মূল্য নিয়ে চুক্তি করা হয়।
    • এটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু লাভজনক হতে পারে।
  4. কমোডিটি মার্কেট (Commodity Market):
    • এটি একটি বিশেষ বাজার যেখানে সোনা, তেল, ধান ইত্যাদির লেনদেন হয়।

গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা:

  1. শেয়ারহোল্ডার:
    যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একটি কোম্পানির শেয়ার ধারণ করে।
    শেয়ারহোল্ডার কোম্পানির মুনাফার একটি অংশ পাওয়ার অধিকারী।
  2. ডিভিডেন্ড:
    কোম্পানির লাভের একটি অংশ যা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
  3. বুল মার্কেট (Bull Market):
    যখন শেয়ার বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে, অর্থাৎ শেয়ারের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়।
  4. বিয়ার মার্কেট (Bear Market):
    যখন শেয়ার বাজার নিম্নমুখী থাকে, অর্থাৎ শেয়ারের দাম ক্রমাগত কমতে থাকে।

শেয়ার বাজারের সুবিধা:

  1. কোম্পানির জন্য মূলধন সংগ্রহ:
    • কোম্পানিগুলি নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে বা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে।
  2. বিনিয়োগকারীদের মুনাফার সুযোগ:
    • শেয়ারের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের সুযোগ।
    • ডিভিডেন্ড পাওয়া যায়।
  3. অর্থনীতির উন্নয়ন:
    • শেয়ার বাজার একটি দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা বাড়ায়।
  4. তারল্য বৃদ্ধি:
    • সহজেই শেয়ার বিক্রি করে নগদ অর্থে রূপান্তর করা যায়।

বিনিয়োগ করার আগে যা জানতে হবে:

  1. বাজার বিশ্লেষণ:
    বাজারের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ প্রবণতা বুঝুন।
  2. কোম্পানির আর্থিক অবস্থা:
    কোম্পানির বার্ষিক রিপোর্ট, লাভ-ক্ষতির হিসাব ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করুন।
  3. ঝুঁকির মাত্রা:
    শেয়ারের দাম হ্রাসের কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকায় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
  4. বিনিয়োগের সময়সীমা:
    দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমে এবং মুনাফার সুযোগ বাড়ে।

বাংলাদেশে শেয়ার বাজারের কাঠামো:

  1. ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE):
    • এটি বাংলাদেশের প্রধান শেয়ার বাজার।
    • ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত।
  2. চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE):
    • ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত।
  3. বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন BSEC):
    • এটি শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
    • বাজারের স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে।

শেয়ার কেনাবেচার প্রক্রিয়া:

  1. ব্রোকার নির্বাচন:
    একটি ব্রোকার বা ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন।
  2. বিনিয়োগের জন্য অ্যাকাউন্ট খুলুন:
    BO (Beneficiary Owner) অ্যাকাউন্ট খুলুন।
  3. শেয়ার নির্বাচন করুন:
    বাজার বিশ্লেষণ করে শেয়ার নির্বাচন করুন।
  4. শেয়ার কিনুন:
    ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শেয়ার কিনুন।
  5. শেয়ার বিক্রি করুন:
    প্রয়োজন বা লাভের সময় শেয়ার বিক্রি করুন।

ঝুঁকি মোকাবিলার উপায়:

  1. ডাইভার্সিফিকেশন (Diversification):
    বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করুন।
  2. গভীর বিশ্লেষণ করুন:
    বাজারের তথ্য, কোম্পানির রিপোর্ট, এবং শিল্পের অবস্থা যাচাই করুন।
  3. লং-টার্ম ভিউ:
    স্বল্পমেয়াদী পরিবর্তন এড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে মনোযোগ দিন।

শেয়ার বাজার একটি জটিল কিন্তু লাভজনক ক্ষেত্র। সঠিক জ্ঞান, ধৈর্য, এবং কৌশল দিয়ে এখানে সফল হওয়া সম্ভব। যদি আপনার আরও নির্দিষ্ট কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে জানাতে পারেন।

বিস্তারিত আরো জানতে : শেয়া বাজারের A to Z

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *